
Table of Contents
Toggle২০২৪-২৫ অর্থ বছরে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের জন্য আয়কর হার
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য আয়কর হার – অর্থ আইন ২০২৪ এর মাধ্যমে সরকার ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের জন্য আয়কর কাঠামোতে (Income Tax Slab) উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন করেছে। Income Tax Slab এর এই পরিবর্তিত কাঠামোর ফলে প্রান্তিক করদাতাদের করের বোঝায় কোনরূপ পরিবর্তন (কম বা বেশি) হয় নি। তবে এই পরিবর্তন মধ্যম ও উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের জন্য সুখকর হয়েছে কারণ তাদের মোট আয়ের উপর এখন আগের চেয়ে কম কর দিতে হবে।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা
২০২৪-২৫ অর্থ বছরে বিদ্যমান স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা, ফার্ম ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য ব্যক্তিপর্যায়ে করমুক্ত আয়সীমা ৩৫০,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়াও নারী করদাতা বা ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ও প্রবীণ নাগরিকদের করমুক্ত আয়সীমা হবে ৪০০,০০০ টাকা, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের করদাতাদের জন্য ৪৭৫,০০০ টাকা এবং যুদ্ধাহত গেজেটেড মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৫০০,০০০ টাকা।
নিচে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমার তালিকা দেওয়া হলো:
মোট আয় | আয়ের উপর করহার |
পুরুষ করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হইবে ৩,৫০,০০০/- টাকা; | শূন্য |
মহিলা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হইবে ৪,০০,০০০/- টাকা; | শূন্য |
৬৫ বৎসর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হইবে ৪,০০,০০০/- টাকা; | শূন্য |
তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা এবং প্রতিবন্ধী স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হইবে ৪,৭৫,০০০/- টাকা ; | শূন্য |
গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা হইবে ৫,০০,০০০/- টাকা ; | শূন্য |
নোট:
১। কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান/পোয্যের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০,০০০/- টাকা অধিক হইবে; প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই করদাতা হইলে যেকোনো একজন এই সুবিধা ভোগ করিবেন;
২। বাংলাদেশে অনিবাসী (অনিবাসী বাংলাদেশি ব্যতীত) এইরূপ সকল করদাতার জন্য এই হার প্রযোজ্য হইবে না;
অর্থ আইন ২০২৪ এ কী পরিবর্তন আনা হয়েছে ?
অর্থ আইন ২০২৪ এর মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য আয়কর স্ল্যাবগুলোর (Income Tax Slab) পুনর্গঠন করা হয়েছে। তবে করমুক্ত আয়ের সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। নিচে পূর্ববর্তী এবং বর্তমান করবর্ষের জন্য ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের জন্য আয়কর স্ল্যাবগুলোর একটি তুলনামূলক চিত্র দেওয়া হলো।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য আয়কর হার :
করহার ২০২৩-২০২৪ | করহার ২০২৪-২০২৫ | ||
আয় | করহার | আয় | করহার |
(ক) প্রথম ৩,৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ০% | (ক) প্রথম ৩,৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ০% |
(খ) পরবর্তী ১,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ৫% | (খ) পরবর্তী ১,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ৫% |
(গ) পরবর্তী ৩,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ১০% | (গ) পরবর্তী ৪,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ১০% |
(ঘ) পরবর্তী ৪,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ১৫% | (ঘ) পরবর্তী ৫,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ১৫% |
(ঙ) পরবর্তী ৫,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ২০% | (ঙ) পরবর্তী ৫,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর | ২০% |
(চ) অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর | ২৫% | (চ) অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর | ২৫% |
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের নতুন কর কাঠামোর (স্ল্যাবের) প্রভাব
ইতিমধ্যে আমরা আলোচনা করেছি যে সরকার ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য আয়কর স্ল্যাবগুলো সংশোধন করেছে। আপনি হয়তো ভাবছেন এই পরিবর্তনগুলো কীভাবে করদাতাদের করদায়কে প্রভাবিত করবে। আমরা এই বিষয়ে একটি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি। আমাদের বিশ্লেষণের সারাংশ নিচে দেয়া হল:
- যেইসব করদাতার বার্ষিক আয় ১১.২৫ লাখ টাকা ওইসব করদাতাদেকে কর কাঠামো পরিবর্তনের জন্য অতিরিক্ত কোন কর দিতে হবে না। অর্থাৎ তাদের করদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না।
- যেইসব করদাতার বার্ষিক আয় ১১.২৫ লাখ টাকার উপর টাকা ২৩ লাখ টাকার নিচে ওইসব করদাতা কর কাঠামো পরিবর্তনের জন্য সুবিধা ভোগ করবেন। এই শ্রেণীর করদাতাদের করের বোঝা কমতে থাকবে। করের বোঝা ২৫,০০০ টাকা পর্যন্ত কমতে পারে।
- যেইসব করদাতার বার্ষিক আয় ২৩ লাখ টাকার উপরে ওইসব করদাতাকে কর কাঠামো পরিবর্তনের জন্য কম কর দিতে হবে। এই শ্রেণীর করদাতাদের করের বোঝা ২৫,০০০ টাকা কমবে।
আমাদের উপরোক্ত বিশ্লেষণে আমরা অনুমান করেছি যে করদাতাগন আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ৭৮ অনুসারে প্রযোজ্য আয়কর রেয়াত পাওয়ার জন্য আয়কর আইন ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ৩ অনুসারে অনুমোদিত খাতসমূহে উপযুক্ত অর্থ বিনিয়োগ করবেন।
ন্যূনতম করের পরিমাণ
ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, মোট আয় করমুক্ত আয়ের সীমা অতিক্রম করলে নূন্যতম করের পরিমাণ প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ নূন্যতম কর শুধুমাত্র তখনই প্রযোজ্য হয় যখন মোট আয় করমুক্ত আয়ের সীমা অতিক্রম করে। নূন্যতম করের পরিমাণ করদাতার অবস্থানের উপর নির্ভরশীল।
অর্থ আইন ২০২৪ এর ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য নূন্যতম করের পরিমাণ নিচে দেওয়া হল:
এলাকার বিবরণ | ন্যূনতম কর (টাকা) |
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা | ৫,০০০ |
অন্যান্য সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা | ৪,০০০ |
সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতা | ৩,০০০ |
গ্রস প্রাপ্তি অনুসারে নূন্যতম কর
বাংলাদেশের কর ব্যবস্থা অনুযায়ী আরো একটি নির্দিষ্ট ধরনের নূন্যতম কর রয়েছে যা গ্রস প্রাপ্তি ভিত্তিক নূন্যতম কর নামে পরিচিত। আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ১৬৩(৫) অনুযায়ী, যেকোনো ব্যক্তি করদাতার মোট গ্রস প্রাপ্তি ৩ কোটি টাকা অতিক্রম করলে তাকে ০.২৫% হারে নূন্যতম কর পরিশোধ করতে হবে।
এই ধারার অধীনে করদাতাদের একটি অতিরিক্ত কর দায় পরিশোধ করতে হবে যা “বিকল্প নূন্যতম কর” নামে পরিচিত, যা তাদের মোট গ্রস প্রাপ্তির ভিত্তিতে গণনা করা হয়।
চূড়ান্ত করদায় নিষ্পত্তি (Final Tax Settlement)
বাংলাদেশে আয় বাবদ যখন কোন অর্থ দেয়া হয় বা যখন আয় ক্রেডিট করা হয় তখন উৎসে কর কর্তন করে রাখা হয়। এই ধরনের কর্তনকে উৎসে কর কর্তন বা TDS বলা হয়। এছাড়াও কিছু কিছু ক্ষেত্রে উৎসে কর সংগ্রহ করা হয় যা TCS নামে পরিচিত।
রিটার্ন দাখিল করার সময় যখন কোন করদাতাকে কোন নির্দিষ্ট আয়ের বিপরীতে উৎসে কর্তনকৃত বা সংগৃহীত করের অতিরিক্ত কোন কর পরিশোধ করতে হয় না, তখন তাকে চূড়ান্ত করদায় বলা হয়। এর মানে হল যে এমন আয়ের উপর করের দায় উৎসে কর্তনকৃত বা সংগৃহীত করের মাধ্যমে সম্পূর্ণভাবে নিষ্পত্তি করা হয়, তাই একে “চূড়ান্ত করদায়” বলা হয়।
চূড়ান্ত করদায় শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ধরনের আয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। বাংলাদেশে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য নিম্নলিখিত আয়ের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত করদায় প্রযোজ্য:
- সঞ্চয়পত্র থেকে প্রাপ্ত সুদ আয় (সূত্র: এসআরও নং ২৫৩-আইন/আয়কর-০৯/২০২৩, তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২৩)
- সম্পত্তি হস্তান্তর (জমি বিক্রয়) হইতে অর্জিত মূলধনী আয় (সূত্র: এসআরও নং ২৮৬-আইন/আয়কর-১৬/২০২৩, তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২৩)
- সম্পত্তি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ হইতে অর্জিত মূলধনী আয় (সূত্র: এসআরও নং ১৭-আইন/আয়কর-২৪/২০২৪, তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০২৪) (নোট: শুধুমাত্র করবর্ষ ২০২৩-২৪ এর জন্য প্রযোজ্য)
বিনিয়োগ কর রেয়াত
আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ৭৮ অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের জন্য নিম্নলিখিত বিধান অনুসারে কর রেয়াত প্রযোজ্য হবে:
কর রেয়াত নিম্নলিখিত তিনটি পরিমাণের মধ্যে সর্বনিম্নটি হবে:
(ক) মোট করযোগ্য আয়ের ৩%;
(খ) অনুমোদিত ক্ষেত্রে প্রকৃত বিনিয়োগের ১৫%; অথবা
(গ) ১০ লাখ টাকা।
আয়কর আইন ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ৩ অনুসারে অনুমোদিত বিনিয়োগের খাতসমূহ জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুনঃ
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য সারচার্জের হার
স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা (assessee being individual) এর ক্ষেত্রে, আয়কর আইন ২০২৩ এর ধারা ১৬৭ অনুযায়ী পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণীতে প্রদর্শিত নিম্নবর্ণিত সম্পদের ভিত্তিতে, নির্ধারিত প্রদেয় করের উপর নিম্নরূপ হারে সারচার্জ প্রদেয় হইবে-
সম্পদ | সারচার্জের হার |
(ক) নিট পরিসম্পদের মূল্যমান ৪ (চার) কোটি টাকা পর্যন্ত | শূন্য |
(খ) নিট পরিসম্পদের মূল্যমান ৪ (চার) কোটি টাকার অধিক কিন্তু ১০ (দশ) কোটি টাকার অধিক নহে; বা, স্বীয় নামে একের অধিক মোটর গাড়ি বা, মোট ৮,০০০বর্গফুটের অধিক আয়তনের গৃহ-সম্পত্তি | ১০% |
(গ) নিট পরিসম্পদের মূল্যমান ১০ (দশ) কোটি টাকার অধিক কিন্তু ২০ (বিশ) কোটি টাকার অধিক নহে | ২০% |
(ঘ) নিট পরিসম্পদের মূল্যমান ২০ (বিশ) কোটি টাকার অধিক কিন্তু ৫০ (পঞ্চাশ) কোটি টাকার অধিক নহে- | ৩০% |
(ঙ) নিট পরিসম্পদের মূল্যমান ৫০ (পঞ্চাশ) কোটি টাকার অধিক হইলে | ৩৫% |
নোটঃ
- “নিট পরিসম্পদের মূল্যমান” বলতে আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৬৭ অনুযায়ী পরিসম্পদ ও দায়ের বিবরণীতে প্রদর্শনযোগ্য নিট পরিসম্পদের মূল্যমান (total net worth) বুঝাইবে; এবং
- “মোটর গাড়ি” বলিতে বাস, মিনিবাস, কোস্টার, প্রাইম মুভার, ট্রাক, লরি, ট্যাংক লরি, পিকআপ ভ্যান, হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও মোটর সাইকেল ব্যতীত অন্যান্য মোটরযান অন্তর্ভুক্ত হইবে।
অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ প্রদর্শনে বিশেষ ব্যবস্থা
অর্থ আইন ২০২৪ এর মাধ্যমে আয়কর আইন ২০২৩ এর প্রথম তফসিলে একটি নতুন অংশ “অংশ ৩ – অপ্রদর্শিত পরিসম্পদ প্রদর্শন” সংযোজন করা হয়েছে। সংযোজিত নতুন বিধান অনুসারে আয়কর আইন ২০২৩ বা অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, আয়কর কর্তৃপক্ষসহ অন্য কোনো সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যক্তির কোনো সম্পদ ( স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোর স্পেস এবং ভূমি ) অর্জনের উৎস নিয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না, যদি উক্ত ব্যক্তি ১ জুলাই ২০২৪ হইতে ৩০ জুন ২০২৫ তারিখের মধ্যে (উভয় দিন অন্তর্ভূক্ত) ২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন বা সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের পূর্বে অপ্রদর্শিত স্থাবর সম্পত্তি যেমন স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোর স্পেস এবং ভূমি এর উপর প্রযোজ্য কর পরিশোধ করেন।
অর্থ আইন ২০২৪ এ প্রাথমিকভাবে সিকিউরিটিজ, নগদ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, আর্থিক স্কিম ও ইনস্ট্রুমেন্ট (financial schemes and instruments), সকল প্রকার ডিপোজিট বা সেভিং ডিপোজিট এবং অন্যান্য আর্থিক সম্পদের মতো অপ্রদর্শিত সম্পদ বৈধ করার বিধান অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে, এই বিধানটি পরবর্তীতে ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে জারি করা এসআরও নং ৩০৩-আইন/আয়কর-৪৬/২০২৪ দ্বারা বাতিল করা হয়। এর ফলে এখন শুধুমাত্র অপ্রদর্শিত স্থাপনা, বাড়ি, ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট, ফ্লোর স্পেস এবং ভূমি আয়কর আইন ২০২৩ এর প্রথম তফসিলের অংশ ৩ এর দফা ১ অনুযায়ী নির্ধারিত হারে কর পরিশোধ-পূর্বক প্রদর্শন করা যাবে।
দানের ক্ষেত্রে বিশেষ বিধান
অর্থ আইন ২০২৪ এর মাধ্যমে আয়কর আইন ২০২৩ এর ষষ্ঠ তফসিল এর অংশ ১ এ অধীন একটি নূতন দফা (দফা ৩৫) সংযোজন করা হয়েছে। সংযোজিত নূতন দফা ৩৫ অনুসারে স্বামী-স্ত্রী, মাতা-পিতা বা সন্তানের নিকট হইতে দান হিসাবে গৃহীত কোনো পরিসম্পদ যদি দাতা ও গ্রহীতার রিটার্নে প্রদর্শিত হয় তাহা হইলে ওই দান আয়কর মুক্ত হবে অর্থাৎ উক্ত দান আয়কর অব্যাহতি প্রাপ্ত হবে। তার মানে স্বামী-স্ত্রী, মাতা-পিতা বা সন্তানের নিকট হইতে কোন দান গ্রহণ বা প্রদান করা হলে, উক্ত দান দাতা ও গ্রহীতা উভয়ের ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নে দেখাতে হবে। যদি উভয়ের ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নে দেখানো হয় তাহলে আয়কর দেয়া লাগবে না।
তবে এইক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, যদি উক্ত দান বিদেশ হইতে বাংলাদেশে অবস্থিত গ্রহীতার নিকট ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রেরিত হয় সেইক্ষেত্রে দাতার রিটার্নে প্রদর্শনের শর্ত প্রযোজ্য হইবে না।
সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আয়কর অব্যাহতি
এসআরও নং ২২৫-আইন/আয়কর-৭/২০২৩, তারিখ ১৩ জুলাই ২০২৩ অনুসারে সরকারি বেতন আদেশভুক্ত কর্মচারীদের সরকার কর্তৃক প্রদত্ত মূল বেতন উৎসব ভাতা ও বোনাস (যে নামে অভিহিত হোক না কেন) ব্যতীত অবসরকালে প্রদত্ত ল্যাম্পগ্রান্টসহ কেবল সরকারি বেতন আদেশে উল্লিখিত অন্যান্য ভাতা ও সুবিধাদিকে আয়কর হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। অর্থাৎ সরকারি চাকরিজীবীগণ সরকার থেকে বেতন হিসেবে যত ধরনের ইনকাম করেন না কেন, সরকারি চাকরিজীবীদের শুধুমাত্র মূল বেতন ও উৎসব ভাতা এর উপর আয়কর প্রদান করতে হয়। মূল বেতন ও উৎসব ভাতা ছাড়া বেতন হিসেবে প্রাপ্ত অন্যান্য সকল ইনকাম আয়কর মুক্ত।
উপসংহার - ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য আয়কর হার
বাংলাদেশে প্রতি বছর সরকার অর্থ আইন এর মাধ্যমে নতুন আয়কর হার নির্ধারণ করে যা একজন ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাকে পরিশোধ করতে হয়। আমরা এই ব্লগ পোস্টে ব্যক্তি শ্রেণীর করদাতাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য আয়কর হার আলোচনা করার চেষ্টা করেছি যাতে আপনি ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য প্রযোজ্য আয়কর হারের উপর একটি ধারণা পেতে পারেন। আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে অনুগ্রহ করে নিচে মন্তব্য করুন।
২০২৪-২৫ অর্থ বছরের জন্য আয়কর হার - রেফারেন্স / উৎস:
- অর্থ আইন ২০২৪;
- আয়কর আইন ২০২৩;
- জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এনবিআর (NBR);
- বাংলাদেশ গেজেট;
Share on –
I want to know about Gift tax. If the husband gifts Tk. 400000 to his spouse and the wife has no TIN, whether the gift will be taxable?