আয়কর আইন ২০২৩
ষষ্ঠ তফসিল - কর অব্যহতি, রেয়াত ও ক্রেডিট [ধারা ৭৬, ৭৭ ও ৭৮ দ্রষ্টব্য]
অংশ ৪ - কর অবকাশ
১। কর অবকাশের জন্য যোগ্য শিল্প স্থাপনা।-
(১) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, নিম্নবর্ণিত কার্যক্রমে সম্পৃক্ত কোনো অনুমোদিত কর অবকাশ সত্তা কর অবকাশের জন্য যোগ্য হইবে, যথাঃ-
(ক) নিম্নবর্ণিত পণ্য উৎপাদন বা তৈরি, যথা:-
(১) এ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যালস ইনগ্রেডিয়েন্ট এবং রেডিও ফার্মাসিউটিক্যালস;
(২) কৃষি যন্ত্রপাতি;
(৩) স্বয়ংক্রিয় ইট;
(৪) অটোমোবাইল;
(৫) ব্যারিয়ার কন্ট্রাসেপটিভ ও রাবার ল্যাটেক্স;
(৬) ইলেকট্রনিক্সের মৌলিক উপাদান (অর্থাৎ রেজিসটর, ক্যাপাসিটর, ট্রানজিসটর, ইনটিগ্রেটেড সার্কিট, মাল্টিলেয়ার পিসিবি);
(৭) বাই-সাইকেল, উহার খুচরা যন্ত্রাংশসহ;
(৮) বায়ো-ফার্টিলাইজার/জৈব-সার;
(৯) বায়োটেকনোলজি ভিত্তিক কৃষি পণ্য/এগ্রো প্রডাক্ট;
(১০) বয়লার উহার খুচরা যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামসহ;
(১১) কম্প্রেসার, উহার খুচরা যন্ত্রাংশসহ;
(১২) কম্পিউটার হার্ডওয়ার;
(১৩) আসবাবপত্র;
(১৪) গৃহ-সামগ্রী বা হোম এ্যাপলিয়েনসেস (ব্লেন্ডার, রাইসকুকার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ইলেক্ট্রিক ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, ইনডাকশন কুকার, ওয়াটার ফিল্টার);
(১৫) কীটনাশক ও বালাইনাশক;
(১৬) চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য;
(১৭) এলইডি টিভি;
(১৮) স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলমূল ও শাকসবজি প্রক্রিয়াকরণ;
(১৯) মোবাইল ফোন;
(২০) পেট্রোকেমিক্যালস;
(২১) ফার্মাসিউটিক্যালস;
(২২) প্লাস্টিক রিসাইকলিং;
(২৩) টেক্সটাইল মেশিনারি;
(২৪) টিসু গ্রাফটিং;
(২৫) খেলনাসামগ্রী উৎপাদন বা টয় ম্যানুফ্যাকচারিং;
(২৬) টায়ার ম্যানুফ্যাকচারিং;
(২৭) ইলেক্টিক্যাল ট্রান্সফরমার;
(২৮) কৃত্রিম তন্তু/ ফাইবার বা মানবতৈরি তন্তু ম্যানুফ্যাকচারিং;
(২৯) অটোমোবাইল যন্ত্রাংশ বা পার্টস ও উপাদান ম্যানুফ্যাকচারিং;
(৩০) অটোমেশন ও রোবোটিক্স ডিজাইন, ম্যানুফ্যাকচারিং, উহার পার্টস ও উপাদানসহ;
(৩১) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক সিস্টেম ডিজাইন এবং ম্যানুফ্যাকচারিং;
(৩২) ন্যানোটেকনোলজি ভিত্তিক পণ্য ম্যানুফ্যাকচারিং;
(৩৩) এয়ারক্রাফট হেভি মেনটেন্যান্স সার্ভিস, খুচরা যন্ত্রাংশ ম্যানুফ্যাকচারিং সহ;
(খ) স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফলমূল ও শাকসবজি প্রক্রিয়াকরণ এবং সংরক্ষণ;
(গ) টিসু গ্রাফটিং, জৈব প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং রেডিও একটিভ (ডিফিউশন) এপ্লিকেশন ইন্ডান্ট্রির উন্নয়ন (অর্থাৎ পলিমারের মান উন্নয়ন বা পলিমারের ক্ষয়সাধন বা খাদ্য সংরক্ষণ বা চিকিৎসা সামগ্রী জীবাণুমুক্তকরণ);
(ঘ) বোর্ড কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত অন্য কোনো সেক্টর বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো কার্য সম্পাদনকারী সত্তা।
(২) অনুমোদিত কর অবকাশ সত্তা বাংলাদেশে অবস্থিত হইতে হইবে এবং জুলাই, ২০২০ হইতে জুন, ২০২৫ এর মধ্যে ইহার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করিতে হইবে।
২। অনুচ্ছেদ ১ এ উল্লিখিত সত্তাসমূহের জন্য কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয়।-
(১) অনুমোদিত কর অবকাশ সত্তার অনুচ্ছেদ ১ এ উল্লিখিত কার্যক্রম হইতে উদ্ভূত ব্যবসা হইতে অর্জিত আয় উপানুচ্ছেদ (৪) অনুসারে কর হইতে অব্যাহতি পাইবে।
(২) উপ-অনুচ্ছেদ (১) এ উল্লিখিত কার্যক্রম ব্যতীত অন্য কোনো উৎস হইতে অর্জিত আয় এই অংশের অন্তর্ভুক্ত হইবে না।
(৩) কোনো সিটি কর্পোরেশন এলাকা বা জেলা সদরের পৌরসভাসমূহ, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, ও খাগড়াছড়ি জেলায় পরিচালিত অনুচ্ছেদ ১ এ উল্লিখিত কার্যক্রম হইতে উদ্ভূত আয়কর অব্যাহতির জন্য যোগ্য হইবে না।
(৪) কর অব্যাহতির পরিমাণ হইবে নিম্নরূপ, যথা-
(ক) যদি অনুমোদিত কর অবকাশ সত্তা ঢাকা বা চট্রগ্রাম বিভাগ এবং রাঙামাটি, বান্দরবান বা খাগড়াছড়ি জেলা ব্যতীত অন্য কোনো জেলায় (সিটি কর্পোরেশন এলাকা বহির্ভত) অবস্থিত হয়, তাহা হইলে উহা বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর মাস হইতে ১০ (দশ) বৎসরের জন্য নিম্নবর্ণিত সারণীতে উল্লিখিত হারে অব্যাহতি প্রাপ্ত হইবে, যথা:-
সারণী
বাণিজ্যিক উৎপাদনের বৎসর | অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয় |
প্রথম বৎসর | ৯০% (নব্বই শতাংশ) |
দ্বিতীয় বৎসর | ৯০% (নব্বই শতাংশ) |
তৃতীয় বংসর | ৭৫% (পঁচাত্তর শতাংশ) |
চতুর্থ বৎসর | ৭৫% (পঁচাত্তর শতাংশ) |
পঞ্চম বৎসর | ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) |
ষষ্ঠ বৎসর | ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) |
সপ্তম বৎসর | ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) |
অষ্টম বৎসর | ২৫% (পঁচিশ শতাংশ) |
নবম বৎসর | ২৫% পঁচিশ শতাংশ) |
দশম বৎসর | ২৫% পঁচিশ শতাংশ); |
(খ) যদি অনুমোদিত কর অবকাশ সত্তা ঢাকা বা চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি কর্পোরেশন এলাকা বহির্ভূত) অবস্থিত হয়, তাহা হইলে উহা বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর মাস হইতে ৫ (পাঁচ) বৎসরের জন্য নিম্নবর্ণিত সারণীতে উল্লিখিত হারে কর অবকাশ প্রাপ্ত হইবে, যথা:-
সারণী
বাণিজ্যিক উৎপাদনের বৎসর | অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয় |
প্রথম বৎসর | ৯০% (নব্বই শতাংশ) |
দ্বিতীয় বৎসর | ৮০% (আশি শতাংশ) |
তৃতীয় বংসর | ৬০% (ষাট শতাংশ) |
চতুর্থ বৎসর | ৪০% (চল্লিশ শতাংশ) |
পঞ্চম বৎসর | ২০% (বিশ শতাংশ) |
৩। ২[***]
৪। ৩[***]
১ অর্থ আইন, ২০২৪ এর ৮৫(ক) ধারাবলে ষষ্ঠ তফসিলের শিরোনামে উল্লিখিত “ধারা ৭৬” শব্দ ও সংখ্যার পর “, ৭৭ ও ৭৮” কমা, সংখ্যাগুলি ও শব্দ সন্নিবেশিত।
২ অর্থ আইন, ২০২৪ এর ৮৫(ঙ) ধারাবলে ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ৪ এর নিম্নরূপ অনুচ্ছেদ ৩ বিলুপ্ত।
[ ৩। কর অবকাশ প্রাপ্তির যোগ্য ভৌত অবকাঠামোসমূহ।-
(১) এই আইনের বিধানাবলি সাপেক্ষে, উপানুচ্ছেদ (২) এ উল্লিখিত ভৌত অবকাঠামো সুবিধা সরবরাহের জন্য স্থাপিত কোনো অনুমোদিত কর অবকাশ সত্তা কর অবকাশের জন্য যোগ্য হইবে, যথা:-
(ক) গভীর সমুদ্র বন্দর, সমুদ্র বন্দর বা নদী বন্দর;
(খ) এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে;
(গ) রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল;
(ঘ) ফ্লাইওভার;
(ঙ) টোলরোড ও ব্রিজ;
(চ) গ্যাস পাইপ লাইন;
(ছ) আইসিটি পার্ক, জোন বা ভিলেজ;
(জ) হাইটেক পার্ক;
(ঝ) অনুমোদিত পানি শোধনাগার;
(ঞ) পানি সরবরাহ বা পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা;
(ট) তরলায়িত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল এবং সঞ্চালন লাইন;
(ঠ) মনো-রেল ও সাবওয়েসহ রেলওয়ে;
(ড) নবায়নযোগ্য জ্বালানি;
(ঢ) বোর্ড কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নির্ধারিত অন্য কোনো প্রকারের ভৌত-অবকাঠামো সুবিধাদি।
(২) ভৌত-অবকাঠামো সুবিধাদি বাংলাদেশে অবস্থিত হইতে হইবে এবং জুন, ২০২৪ এর মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করিতে হইবে।
৩ অর্থ আইন, ২০২৪ এর ৮৫(ঙ) ধারাবলে ষষ্ঠ তফসিলের অংশ ৪ এর নিম্নরূপ অনুচ্ছেদ ৪ বিলুপ্ত।
[ ৪। অনুচ্ছেদ ৩ এ উল্লিখিত সত্তাসমূহের জন্য কর অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয়।-
(১) অনুচ্ছেদ ৩ এই উল্লিখিত সুযোগ-সুবিধাদি হইতে উদ্ভূত ব্যবসা হইতে অনুমোদিত কর অবকাশ সত্তার অর্জিত আয় উপানুচ্ছেদ (৩) অনুসারে কর হইতে অব্যাহতি পাইবে।
(২) উপ-অনুচ্ছেদ (১) এ উল্লিখিত সুযোগ-সুবিধাদি ব্যতীত, অন্য কোনো উৎস হইতে অর্জিত আয় এই অংশের আওতাভুক্ত হইবে না।
(৩) বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর মাস হইতে ১০ (দশ) বৎসরের জন্য নিম্নবর্ণিত সারণীতে উল্লিখিত হারে কর অব্যাহতি প্রদান করা হইবে, যথা:-
সারণী
বাণিজ্যিক উৎপাদনের বৎসর | অব্যাহতিপ্রাপ্ত আয় |
প্রথম বৎসর | ৯০% (নব্বই শতাংশ) |
দ্বিতীয় বৎসর | ৯০% (নব্বই শতাংশ) |
তৃতীয় বংসর | ৭৫% (পঁচাত্তর শতাংশ) |
চতুর্থ বৎসর | ৭৫% (পঁচাত্তর শতাংশ) |
পঞ্চম বৎসর | ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) |
ষষ্ঠ বৎসর | ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) |
সপ্তম বৎসর | ৫০% (পঞ্চাশ শতাংশ) |
অষ্টম বৎসর | ২৫% (পঁচিশ শতাংশ) |
নবম বৎসর | ২৫% পঁচিশ শতাংশ) |
দশম বৎসর | ২৫% পঁচিশ শতাংশ); ] |
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই ওয়েবসাইটে উল্লিখিত কোনো কিছু যদি সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত আইন, বিধি, প্রজ্ঞাপন ও আদেশের সহিত সাংঘর্ষিক হয় সেইক্ষেত্রে উক্ত ইস্যুকৃত আইন, বিধি, প্রজ্ঞাপন ও আদেশই প্রাধান্য পাবে।